একজন সত্যিকারের নারীর গুণঃ একজন সত্যিকারের ভাল নারীর কি কি গুণ থাকা উচিত ? মনোবিজ্ঞানের মতে প্রায় ৮ থেকে ১০ টি এমন বৈশিষ্ট রয়েছে যা একজন সত্যিকারের ভদ্র নারীকে সংজ্ঞায়িত করে। যেমন সততা, সহানুভূতিশীল মনোভাব , নির্লোভতা, অপরকে সম্মান জানানো ইত্যাদি । কিন্তু এখানে আমরা একজন সত্যিকারের নারীর এসব গুণ নিয়ে আলোচনা করব না।
আমরা একটা কথা জানি, “সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে” …… …… অর্থাৎ , একটা সংসারের সুখ দুঃখ একজন নারীর উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল । একজন আদর্শ নারীর কিছু ভালো গুণ থাকে। এখানে ২ টি গল্পের মাধ্যমে সেইরকমই ২ টি গুণের কথা বলা হয়েছে। গল্প দুটি পড়ে একজন সত্যিকারের নারীর গুণ কি হওয়া উচিৎ জানুন …… … … … … … … … … … … … … …

একজন সত্যিকারের নারীর গুণঃ (১) উপযুক্ত নারী
রিনা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে নিজের শহরে একটি বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি পেয়ে গেল। আজকের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘চুটিয়ে কাজ – চুটিয়ে পার্টি’ করা মেয়ে রিনা। বছর খানেক কাজ করার পর রিনার মা- বাবা ঠিক করলেন, এবার একটা উপযুক্ত পাত্র সন্ধান করতে হবে।
রিনা ভাবতে বসল , কি ধরনের পাত্র তার উপযুক্ত হবে! তার মা- বাবা বিভিন্ন পাত্র এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু্, তারা দেখলেন , রিনা সবকটি সম্বন্ধ খারিজ করে দিচ্ছে। কেউ বেশি লম্বা, কেউ বেশ খাটো , কেউ বেশ মোটা , কেউ বেশি রোগা , আবার কেউ বোকা- বোকা , নির্বোধ । এই করতে করতে একটি বছর পেরিয়ে গেল।

রিনা তার দিদিমার কাছে কয়েকদিনের জন্য থাকতে গেল। স্বাভাবিকভাবেই একদিন বিয়ের কথা উঠল । “বিয়ের ব্যাপার কতদূর এগুলো ?” দিদিমা জিজ্ঞেস করলেন।
রিনা পরিস্কার জানিয়ে দিল, “না, না, কোন খবর নেই এখনও ।”
দিদা জিজ্ঞেস করলেন, “এত দেরি হচ্ছে কেন?”
রিনার জবাব, “উপযুক্ত পাত্র পাচ্ছি না, দিদা।”
দিদা তার দিকে খানিক্ষন তাকিয়ে উত্তর দিলেন, “উপযুক্ত মানুষ খুঁজতে যেও না, কখনও পাবে না। আগে নিজেকে উপযুক্ত নারী করে তোল ।”
একজন সত্যিকারের নারীর গুণঃ উপযুক্ত নারী গল্প থেকে শিক্ষাঃ
কোন মানুষই নিখুঁত নয়। আমাদের কখনই আশা করা উচিত নয় যে, কেউ নিজেকে পাল্টে আমাদের ‘মনের মত’ হয়ে উঠবে । আমরা যেটা পারি, সেটা হল, নিজেকে পাল্টে অন্যদের উপযুক্ত করে তুলতে।।
আরও পড়ুন ……… সাফল্য ধরে রাখার মন্ত্র 1 best story
একজন সত্যিকারের নারীর গুণঃ (২) ভালবাসাই মূল্যবান
ভীষণ ভুলো মন সমরের। ও একজন খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী , আর নিজের জগতেই বাস করে। বেশিরভাগ সময়েই নিজের চারপাশে কী ঘটছে ভুলে যায় ও । ওর স্ত্রী সহেলী ওর এই ভুলো মন শান্ত ভাবেই মেনে নিয়েছে। কোন সময়েই অভিযোগ করে না। সমর অবশ্য একেবারে সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে স্ত্রীকে ভালবাসে। কিন্তু ওর মন পড়ে থাকে কোন শিল্পকর্ম বা রঙের দিকে, যা হয়তো সেই সময় তার মনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
পঞ্চম বিবাহবার্ষিকীতে , সহেলী ওর জন্য একটা সুন্দর কেক তৈরি করল। সহেলীর বোনও এল ওকে সাহায্য করতে। কিন্তু সমর বিবাহবার্ষিকীর কথা বেমালুম ভুলে গেল। এমনকি যখন বাড়ি ফিরল, তখন কেকটা দেখেও ওর মনে পড়ল না, কেন ওই কেকটা রাখা আছে।

সহেলী শান্তভাবেই ওকে সব মনে করাল, আর হাত- মুখ ধুয়ে আসতে বলল। সমর চলে যেতেই সহেলীর বোন রাগে ফেটে পড়ল , “এইরকম একটা ভুলো লোকের সঙ্গে কি করে থাকিস তুই? আমি জানি, জামাইবাবু তোকে ভালবাসেন। কিন্তু উনি কিভাবে এত বিরক্তিকর! সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তারিখ ভুলে যান, ঘরের মাঝখানে জুতো রেখে দেন, অন্য জিনিসপত্র কোথায় রাখেন মনে করতে পারেন না, ………… আর কত বলব! তুই কেন কিছু বলিস না?”
সহেলী বলল, “আমি ওকে কিছু বলি না, কারন, নিখুঁতভাবে কোন কাজ করার চেয়েও বেশি মূল্যবান হল ভালবাসা।”
একজন সত্যিকারের নারীর গুণঃ ভালবাসাই মূল্যবান গল্প থেকে শিক্ষাঃ
আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের সঙ্গীর খুঁত ধরা, আর তার জন্য আমরা কত কষ্ট পাচ্ছি তা নিয়ে অভিযোগ করার থেকেও মূল্যবান হচ্ছে ভালবাসা। সহেলী জানত, তার স্বামী তাকে কতটা ভালবাসে। তাই সবকিছু ভুলে সে একটি সুন্দর , সুখের জীবন কাটাচ্ছিল ।।
আরও পড়ুন … … … সফলতার সূত্রঃ 1 গল্প থেকে অনুপ্রেরণাঃ