শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প : শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড । তাঁরা মানুষ গড়ার কারিগর। প্রত্যেক শিক্ষকের শিক্ষাদানের পদ্ধতি আলাদা আলাদা। কিন্তু কোন শিক্ষক যদি সকল ছাত্রছাত্রীকে একই পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করেন , তবে সেটা ঠিক হবে না। কারন , সমস্ত ছাত্রছাত্রীর মানসিকতা এক রকম নয়। কিছু ছাত্রছাত্রী আছে, যারা শিক্ষকের নির্দেশ অমান্য করতে বেশি ভালবাসে, আবার কেউ কেউ নতুন কিছু শিখতে ভয় পায়। শিক্ষকদের উচিত ছাত্রছাত্রীর মানসিকতা বুঝে শিক্ষাদানের পদ্ধতি চয়ন করা। আসুন , শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয় নীচের ২ টি মোটিভেশনাল গল্প থেকে জেনে নেওয়া যাক , কিভাবে বিভিন্ন মানসিকতার ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষা দিতে হয় ………………………
শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: (১) এক ঘোড়ার গল্প
শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: এক ঘোড়ার গল্প: এক রাজা একটা নতুন ঘোড়া কিনলেন। কিছুদিন পর তাঁর নতুন ঘোড়ার পিঠে চেপে ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা হল । কিন্তু দেখা গেল ঘোড়াটি রাজাকে তার পিঠে চাপার অনুমতি দিচ্ছে না। ঘোড়াটি রাজাকে বার বার ফেলে দিতে লাগল । এমনকি সেটিকে তার জায়গা থেকে এতটুকু সরানো গেল না। রাজামশাই বিরক্ত হলেন। তিনি তাঁর সেরা ঘোড়সওয়ারকে ডেকে পাঠালেন । তাকে দায়িত্ব দিলেন, যাতে এক মাসের মধ্যে ঘোড়াটিকে দৌড়ানো আর সওয়ারি করা শেখানো যায় ।
কিন্তু এক মাস পর লোকটি এসে জবাব দিল যে, কোনমতেই ঘোড়াটিকে ছোটানো যাচ্ছে না, পিঠে চাপা তো দূরের কথা! এটা শুনে রাজা খুব চিন্তায় পড়লেন। তিনি ঘোষণা করলেন, এমন কোন ব্যক্তি যদি থাকে , যে, ঘোড়াটিকে প্রশিক্ষিত করতে সক্ষম হবে, তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
ঘোষণা শুনে এক ব্যক্তি এগিয়ে এলেন। তিনি এক মাসের জন্য ঘোড়াটিকে নিয়ে গেলেন। এক মাস পর রাজামশাই দেখলেন, সেই ব্যক্তি ঘোড়ায় চেপে রাজসভায় আসছেন। রাজা অবিশ্বাসের সুরে বললেন, ” কিভাবে এটা সম্ভব হল, আমাকে বলুন।”
লোকটি বলল, ” আমি কখনই ঘোড়াটিকে ছোটানো শেখাতে যায়নি। আমি প্রথমে মাঠের মাঝে ঘোড়াটিকে কিছু ছোলা খেতে দিলাম। তারপর আমি নিজে একা একা মাঠের চারধারে দৌড়াতে লাগলাম । হাফিয়ে গেলে পর, আমি মাঠের মাঝখানে বসে পরে ঘোড়ার সাথে ছোলা খেতে লাগলাম । সাতদিন এইভাবে চলতে থাকল। অষ্টম দিনে আমি দেখলাম , ঘোড়াটা আমার সাথে দৌড়াতে শুরু করল। কয়েকদিন আমরা একসাথে দৌড়ালাম । আরও কিছুদিন পর ঘোড়াটা আমাকে তার পিঠে বসার অনুমতি দিল। এখন আমি প্রতিদিনই ঘোড়াটির পিঠে চেপে মাঠ পরিভ্রমণ করি।” এই কথা শুনে রাজা খুব খুশি হলেন, আর লোকটিকে পুরস্কৃত করলেন।
শিক্ষা : (শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: এক ঘোড়ার গল্প)
কখনও কখনও আপনার কথায় কাজ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিজেকে কাজে লেগে পরতে হবে। আপনার দেখাদেখি ছাত্ররাও কাজ করতে বা কাজ শিখতে বাধ্য হবে।।
শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: (২) এক ঈগলের গল্প
শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: এক ঈগলের গল্প: এক রাজা মেলা থেকে এক ঈগল কিনে আনলেন। কিন্তু রাজসভায় আনার পর দেখা গেল ঈগলটি উড়তে পাড়ছে না। রাজা তাঁর রাজ্যের সেরা পক্ষী বিশারদকে ডেকে পাঠালেন । বললেন, ” তুমি পাখিটিকে উড়তে শেখাও।”
এক সপ্তাহ পর পক্ষী বিশারদ পাখি ফিরত এনে বলল ,” রাজামশাই, এ পাখিটিকে আমি ওড়ানো শেখাতে পারলাম না। এটিকে গাছের যে ডালে বসাচ্ছি, সেখান থেকে এক চুলও নড়াতে পারছি না। এটা নিতান্তই একটা অলস পাখি। আমাকে ক্ষমা করবেন।”
রাজা খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। তিনি ঘোষণা করলেন – যে ব্যক্তি ঈগলটিকে উড়তে শেখাতে পারবে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।
এক ব্যক্তি রাজার কাছে এসে বললেন, ” রাজামশাই , পাখিটিকে ওড়াতে আমার মাত্র একটা দিন লাগবে। আমাকে একদিন সময় দিন, আমি পাখিটাকে ওড়ানো শিখিয়ে দিচ্ছি।”
একদিন পর দেখা গেল সত্যি সত্যি পাখিটা উড়ছে ।
রাজামশাই অবাক হয়ে জানতে চাইলেন – এটা কিভাবে সম্ভব হল।
ঐ ব্যক্তি বললেন , ” রাজামশাই, পাখিটা হল ঈগল , আর ঈগল পাখি উড়তে পারে না , এটা হতেই পারে না! প্রথমে আমি পরীক্ষা করে দেখলাম পাখিটা অসুস্থ কি না। যখন নিশ্চিত হলাম যে ওটা সুস্থ, তখন বুঝলাম যে পাখিটা উড়তে চাইছে না। তখন আমি ঈগলটিকে এক উঁচু পাহাড়ে নিয়ে গেলাম। সেটাকে একটা গাছের উঁচু ডালে বসালাম। এবার একটা কাটারি নিয়ে গাছের সেই ডালটা কেটে ফেললাম। যখনই কাটা ডাল সহ ঈগলটি পাহাড় থেকে পরতে লাগল , তখনই সে নিজেকে বাঁচাবার জন্য উড়তে শুরু করল। তার মন থেকে ওড়ার ভয় দূর হল। সে এখন সবসময় উড়তে চায় ।”
এই কথা শুনে রাজা খুব খুশি হলেন এবং তাকে পুরস্কৃত করলেন।
শিক্ষা : (শিক্ষকদের জন্য মোটিভেশনাল গল্প: এক ঈগলের গল্প )
অনেক ছাত্রছাত্রী আছে যারা শিখতে চায় না। তাদের শেখার কোন মানসিকতায় নেই। আমাদের উচিত তাদের এমন কোন পরিস্তিতিতে ফেলা, যাতে তারা শিখতে বাধ্য হয়।।
আরও পড়ুন … … … … 1 টি গল্প থেকে জীবনে সফল হবার মন্ত্র জানুন