সাফল্যের মন্ত্র – 1 টি Best জ্ঞান দায়ক গল্প

সাফল্যের মন্ত্রঃ জীবনে সফল হতে হলে বেশ কিছু নিয়ম নীতি অনুসরণ করে চলতে হয়। আপনার কিছু ভাল অভ্যাস আপনাকে সাফল্যের দরজায় পৌঁছে দেবে। সফল হতে হলে প্রথমত আপনাকে আপনার লক্ষ্য স্থির করতে হবে, তারপর আপনাকে স্থির করতে হবে কত সময়ে আপনি ঐ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।   এরপর,  ঐ লক্ষ্যে পৌঁছাবার জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কখনই হাল ছাড়লে চলবে না। যাত্রাপথে সর্বদায় ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখতে হবে,  আর নিজের প্রতি থাকতে হবে ভরপুর আত্মবিশ্বাস। চলার পথে  কিছু ভুলভ্রান্তি অবশ্যই হবে।  সেগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে উন্নত করলে, তবেই জীবনে চরম সাফল্য আসবে।

আসুন, নিচের গল্প থেকে সাফল্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র শেখা যাক … … … … … … … … …

 

সাফল্যের মন্ত্র
সাফল্যের মন্ত্র

 

সাফল্যের মন্ত্রঃ গল্প- উপযুক্ত সেক্রেটারি

 

আঞ্জেলার বয়স ৪০ বছর। তার স্বামী কয়েকমাস আগে মারা গেছেন। তাই ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব এসে পড়ল তার কাঁধে । দুই এক মাস টাকা পয়সার অভাব হল না। কিন্তু তার পরেই জমা টাকায় হাত পড়তে শুরু হল। ফ্ল্যাটের মালিক ভাড়া চাইতে শুরু করল। আঞ্জেলা বুঝতে পারল, তাকে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে এখুনি একটা কাজ খুঁজতে হবে।

বছর কয়েক আগে আঞ্জেলা কম্পিউটারের একটা কোর্স করেছিল, কিন্তু বিয়ের পর সে সব আর অভ্যাস করা হয়নি। তাই সে ভয় করতে লাগল যে,  সে কোন কাজ পাওয়ার যোগ্য কি না। তবু সে কাজের খোঁজ করতে শুরু করল।

যত দিন যেতে লাগল ততই একটা কাজ পাওয়ার জন্য আঞ্জেলা ব্যাকুল হয়ে উঠল । কর্মখালির যাবতীয় ছোট বড় বিজ্ঞাপনে চোখ বোলাতে শুরু করল। ফোনে যোগাযোগ করা, বিভিন্ন অফিসে ঢুঁ মারা, বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে কথা বলা, কোন কিছুই সে বাকি রাখল না। তবু কাজের কাজ কিছু হল না। বছর চল্লিশের মহিলা, তার ওপর কাজের কোন অভিজ্ঞতা নেই, তাই কেউ তাকে কাজ দিতে রাজি হচ্ছিল না।

একদিন তার এক ভাই জানাল, একটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এম ডি ) একজন সেক্রেটারি খুঁজছেন । তবে তাঁর সম্পর্কে গুজব আছে যে, তিনি কর্মীদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করেন।

আঞ্জেলা তখন পাগলের মতো একটা কাজ খুঁজছিল । তাই এসব শোনার পরও সে ইন্টারভিউ দিতে ঐ সংস্থায় পৌঁছে গেল।

এদিকে এম ডি-র জন্য একজন “উপযুক্ত সেক্রেটারি” খুঁজতে সংস্থার হিউম্যান রিসার্চ ম্যানেজারের কালঘাম ছুটে যাচ্ছিল । এতদিন ধরে  যে সকল সেক্রেটারি নিয়োগ করা হচ্ছিল, তাদের কেউই দুদিনের বেশি এম ডি -র সঙ্গে কাজ করতে পারেনি। এম ডি -র বিরুদ্ধে তাদের নানা অভিযোগ ম্যানেজারকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছিলতাই যোগ্যতায় অনেক প্রার্থীর থেকে পিছিয়ে থাকলেও তিনি আঞ্জেলাকে নিয়োগ দিলেন। তাকে বলা হল, সমস্ত সময় কাজই হতে হবে তার ধ্যান-জ্ঞান, এবং দক্ষতার প্রশ্নে শেষ কথা হবে তার কাজ। আঞ্জেলা শুধু ঘাড় নাড়ল , এবং সেদিন থেকেই কাজে লেগে পড়ল ।

 

সাফল্যের মন্ত্র
সাফল্যের মন্ত্র

 

যে মুহূর্তে অন্য সেক্রেটারিরা আঞ্জেলার নিয়োগের কথা জানতে পারল, তখনই সকলে নিজেদের মধ্যে গুজগুজ ফুস্ফুস শুরু করে দিল। কেউ আবার আঞ্জেলাকে এম ডি- র সঙ্গে নিজের কাজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করল। একজন তো বলেই দিল , যে কোনদিন কোন কারন ছাড়াই তাকে হয়তো অফিস থেকে বের করে দেওয়া হবে। 

এরপর টানা ১৫ বছর ধরে আঞ্জেলা এম ডি- র সেক্রেটারি হয়ে কাজ করে যখন অবসর নিল, তখন পদন্নতি হতে হতে সে সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিল। 

অবসরের দিন যে সমস্ত কর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানাতে এল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এম ডি- র পূর্ব সেক্রেটারি ছিল। তাদের মধ্যে একজন আঞ্জেলাকে জিজ্ঞেস করল, কি  করে সে এতো বছর ধরে এম ডি -র মতো একজন বসের সঙ্গে কাজ করতে পারল। 

আঞ্জেলা উত্তর দিল ,” দারিদ্রতা!” “আমাকে প্রবল দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছিল। আমি জানতাম যে , পরিবারের স্বার্থে আমাকে কাজটা যেমন করে হোক রক্ষা করতে হবে। অন্য সেক্রেটারিদের মতো আমার ভাববার সময় ছিল না , যে, বস খুব খিটখিটে বা কাজের জন্য খুব বেশি চাপ দেন। এম ডি সম্পর্কে কে কি বলছেন , তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় আমার ছিল না। আর যখন একবার কাজের চাপ নেওয়া অভ্যাস হয়ে গেল , তখন এম ডি -র চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে আমার আর অসুবিধা হল না।” 

 

সাফল্যের মন্ত্র
সাফল্যের মন্ত্র

 

সাফল্যের মন্ত্রঃ “উপযুক্ত সেক্রেটারি” গল্প থেকে শিক্ষাঃ 

 

যখন আমরা সত্যিই কোন লক্ষ্যে পৌঁছাতে অস্থির হয়ে পরি,  তখন আমাদের সামনের বাধা বিপত্তির দিকে আমাদের দৃষ্টি পড়ে না। আর এটাই হল সাফল্যের এক গুরুমন্ত্র। “লক্ষ্য স্থির করুন, আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠুন ।।” 

 

আরও পড়ুন … … … সাফল্য ধরে রাখার মন্ত্র 1 best story

আরও পড়ুন … … … ব্যর্থতা জীবনের শেষ কথা নয়ঃ অনুপ্রেরণার গল্পঃ

 

Leave a Comment

Solverwp- WordPress Theme and Plugin