Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুনঃ 1 best বাংলা motivational গল্প

Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুনঃ আমরা সবসময় comfort zone এ থাকতে চাই । কখনই সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই না। কারন,  আমরা কোন কিছু হারাতে ভয় পাই। আর এই হারাবার ভয়ে আমরা নতুন কিছু  চেষ্টাই করি না। যদি কোনভাবে আমাদের মন থেকে হারাবার ভয় দূর হয়, তবে আমরা জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে বাধ্য । আসুন নিচের গল্প থেকে শিক্ষা নেওয়া যাক কিভাবে comfort zone থেকে বেরিয়ে আসা যায় … … …

 

Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুন ( সঞ্জয়ের গল্প)

 

Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুন
Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুন

 

মহাভারতের যুগে ভারতে সিন্ধু নদের উপত্যকায় শৌভিরা নামে এক রাজ্য ছিল। সেখানকার রাজা তাঁর একমাত্র নাবালক পুত্র সঞ্জয় এবং স্ত্রী বিদুলা কে রেখে হঠাৎ মারা যান । ফলে নাবালক রাজপুত্র সঞ্জয়ের মাথায় রাজ্য রক্ষার ভার পরে। 

 

সিন্ধু নদের অপর পারে সিন্ধ নামে আর এক রাজ্য ছিল। সেই রাজ্যের রাজা সুযোগ বুঝে শৌভিরা রাজ্য আক্রমণ করে বসে। তার সুবিশাল ও সুদক্ষ সেনাবাহিনীর কাছে সঞ্জয়ের মত এক নাবালক রাজা আর তার অদক্ষ সেনাবাহিনী যে পরাজিত হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

সিন্ধ রাজের পদাতিক ও অশ্বারোহী সেনাবাহিনী শৌভিরা রাজ্যের দিকে এগোতে শুরু করল। জেতার কোন সম্ভাবনাই  নেই জেনে সঞ্জয় যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করল। তার বাবা বেঁচে থাকলে তাকে কোনদিনই এই অবস্থার সন্মুখীন হতে হত না। তার চোখ বেয়ে জল নেমে এল। সে এখন বাঁচার চেষ্টা করবে, তার এখনও মরার বয়স হয় নি। তার চোখে মুখে ভয় নেমে এল। সে তার দুর্গের দিকে ঘোড়া ছোটাতে লাগল। 

 

কিন্তু তার অবাক হওয়া বাকি ছিল। দুর্গের কাছে এসে সে দেখল,  দুর্গের দরজা বন্ধ। সে ফিরে আসছে দেখে  তার মা বিদুলা প্রহরীদের আদেশ দিয়েছিলেন দরজা বন্ধ করে দিতে, যাতে সঞ্জয় দুর্গে প্রবেশ করতে না পারে।মনে প্রচণ্ড আঘাত খেয়ে সে তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল। কেন তার মা তাকে ঢুকতে  দিল না! সে চেয়েছিল তার মায়ের কোলে মাথা রেখে একটু ঘুমাতে। সে তার মায়ের মুখে কোন মায়া বা ভালোবাসা দেখতে পেল না, সে কেবল তার মুখে একটা কাঠিন্য লক্ষ করল। 

 

” যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে যাও ,” তিনি আদেশ দিলেন, ” কারন, ক্ষত্রিয়রা কখনও ভীরুর মত পরাজয় স্বীকার করে না।”

 

সঞ্জয়ের তার মায়ের কথা বিশ্বাস হল না। সে ভাবতে থাকল যে, সে তার জীবন বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পেরেছে, এটা কি তার মায়ের পছন্দ হচ্ছে না! 

 

“ওঠো পুত্র, বীরের মত যুদ্ধ কর। তোমার কাছে দুটো অপশন আছে —— শত্রুকে পরাজিত কর, আর বিজয়ী হয়ে ফিরে এসো , অথবা যুদ্ধ করে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ বিসর্জন দাও। যখন কেউ যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেয়, তখন তার মৃত্যু হয় না, সে অন্য জগতে অবস্থান করে। সুতরাং, লোকসানের কিছু নেই। 

 

তার মায়ের কথায় সঞ্জয় উদ্বুদ্ধ  হয়। সে শান্তভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে পা বাড়ায় । এখন সে আর পুরানো সঞ্জয় নয়, সে এক নতুন প্রত্যয়ে সেনাবাহীর হাল ধরে। কয়েক মিনিটের মধ্যে পাশা পাল্টে যায় । এখন সিন্ধ রাজা তার সেনাবাহিনী নিয়ে পশ্ছাদ্ধাবন করতে বাধ্য হয়। সঞ্জয় রক্তাক্ত ও আহত হয়ে দুর্গে ফিরে আসে, কিন্তু সন্মানের সাথে। সে এক অকল্পনীয় কাজ করেছে ——– এক ক্ষুদ্র সেনাবাহিনী নিয়ে বিশাল জয় অর্জন করেছে ! সে আজ এক সাহসীকতা আর Leadership এর নতুন শিক্ষা লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে এই যুদ্ধের আসল নায়ক সঞ্জয় নয়, তার মা বিদুলা।।

 

  Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুন (শিক্ষা)

 

উপরের গল্পে আমরা সঞ্জয়কে ভীতু থেকে এক সাহসী রাজায় পরিনত হতে দেখলাম। তার মায়ের উৎসাহব্যাঞ্জক কথা তার মনে সাহস সঞ্চার করে। প্রথমে তার প্রাণ যাওয়ার ভয়ে সে comfort zone অর্থাৎ তার মায়ের কোলে আশ্রয় নেওয়ার কথা ভেবেছিল। কিন্তু তার মা তাকে comfort zone থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেন, যা তার মানসিকতার পরিবর্তন ঘটায় এবং সে যুদ্ধে জয়লাভ করে। সুতরাং, Comfort Zone থেকে বেরিয়ে আসুন । 

আরও পড়ুন … … … গল্প থেকে শিক্ষা : Negativity inside us

 

Leave a Comment

Solverwp- WordPress Theme and Plugin