Motivational Story বিশ্বাসের জয় ; কাজে সফল হতে গেলে যেটা দরকার তা হল বিশ্বাস। নিজের উপর বিশ্বাস, দলের উপর বিশ্বাস, Leader এর উপর বিশ্বাস , আর সর্বোপরি ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস। এর কোন একটার অভাব ঘটলেই আমরা সফলতা থেকে বঞ্চিত হব । আর যদি আমাদের ওই সবকিছুর উপর অগাধ বিশ্বাস থাকে, তাহলে যে কোন কাজেই সফলতা আসবে। Let’s start reading the Motivational Story বিশ্বাসের জয় ..
Motivational Story বিশ্বাসের জয়ঃ এক শিশুর বিশ্বাসের গল্পঃ
এক গ্রামে খরা দেখা দিয়েছিল । প্রায় দেড় বছর সেখানে কোন বৃষ্টি হয়নি । মাটি শুকনো হয়ে ফাটতে শুরু করেছিল। চাষাবাদ বন্ধ হয়ে পরেছিল । এক ফোটা বৃষ্টির জন্য সেখানকার লোকেরা ব্যাকুল হয়ে উঠল ।
গ্রামের প্রধান একদিন এক meeting এর আয়োজন করলেন। সেখানে গ্রামের সকলে উপস্থিত হল । শুরু হল এই বিপদ থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায় ,তার আলোচনা। সকলেই মনে করেছিল , গ্রামের দেবী কোন কারণে গ্রামবাসীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন, তাই এই অবস্থা। দেবীকে প্রসন্ন করতে পারলেই বৃষ্টি আসবে।
সেইমত আলোচনা শেষে তারা গ্রামের মন্দিরের পূজারীর কাছে গেল । সব শুনে পূজারী একটা বিধান দিলেন । তিনি বললেন, আগামী পূর্ণিমার দিন গ্রামের মাঠে একটা যজ্ঞ করা হবে। সেই যজ্ঞে গ্রামের প্রতিটি ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকতে হবে, এবং যজ্ঞের আগুনে প্রত্যেককে ফল, ফুল ইত্যাদি আহুতি দিতে হবে। তবেই দেবী প্রসন্ন হয়ে বৃষ্টি প্রদান করবেন।
চার দিন পরেই ছিল পূর্ণিমা । গ্রামের সবাই ফুল-ফল , পূজা সামগ্রী নিয়ে মাঠে উপস্থিত হল। পূজারী শুভ মুহূর্তে দেবীকে আহ্বান করে , বেদমন্ত্র উচ্চারণ করে যজ্ঞ শুরু করলেন । গ্রামের সকলেই যজ্ঞে অংশ নিয়েছিল । এক এক করে সকলে ফুল, ফল , নৈবেদ্য দেবীর উদ্দেশ্যে আহুতি দিতে থাকল ।
বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে যজ্ঞ চলল , কিন্তু আকাশে মেঘের কোন চিহ্ন দেখা গেল না। প্রতিদিনের মতই সূর্য তার তেজ দেখিয়ে চলল। কিছুক্ষন বাদে যজ্ঞ শেষ হতে চলল , কিন্তু আবহাওয়ার কোন পরিবর্তন না দেখে একজন পূজারীকে বলল, ” ঠাকুর মশাই, আকাশে তো মেঘের চিহ্নমাত্র নেই। মনে হয় দেবী এই পূজা স্বীকার করেননি, আমরা বেকারই আহুতি দিলাম।”
পূজারী বললেন, নিশ্চয় কোন ত্রুটি হয়েছে। আমি গ্রামের প্রত্যেক ব্যক্তিকে , বাচ্ছা, বুড়ো , মহিলা, পুরুষ সবাইকে এসে আহুতি দিতে বলেছিলাম। মনে হচ্ছে যজ্ঞের শর্ত পূরণ হয়নি, এমন কেউ আছে যে আহুতি দেয়নি।
ভিড়ের মধ্যে ফিস ফিস শোনা যায় । সকলেই দেখে যে পরিবারের সবাই এসেছে কিনা। তখন এক মহিলা বলে উঠে , ঠাকুর মশাই আমার ছেলে আহুতি দিতে আসেনি।
যাও ডেকে নিয়ে এস, পূজারী বললেন।
সেই সময় সবাই দূর থেকে একটা সাত- আট বছরের ছেলেকে ছুটে ছুটে আসতে দেখল । তার হাতে ছিল একটা থালা, যাতে কিছু ফলমূল ছিল। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল , তার বগলে ছিল একটা ছাতা।
ছেলেটি কাছে আসতেই গ্রামের প্রধান তাকে ধমক দিয়ে বলল, কি রে, তুই কোথায় ছিলিস? তোর জন্য এই যজ্ঞ ব্যর্থ হতে চলেছে । সকলের আহুতি ব্যর্থ হয়ে গেল ।
ছেলেটা বলল, আমি তো পাশের গ্রামে ফুল আনতে গিয়েছিলাম। ফুল নিয়ে সোজা এখানেই আসছিলাম। তারপর মনে পরে গেল , যজ্ঞ শেষ হলেই তো বৃষ্টি হবে, মা ছাতা নিয়ে গেলো কি দেখে আসি। তাই আবার ঘরে গিয়েছিলাম । গিয়ে দেখলাম মা ছাতা নেয়নি। তাই ছাতা নিয়ে আসতে দেরি হয়ে গেল।
প্রধান চিৎকার করে বলল, বোকা কোথাকার, তুই কি ভাবছিস তুই আহুতি দিলেই বৃষ্টি এসে যাবে?
সেই সময় পূজারী বললেন, প্রধান মশাই, ওকে যজ্ঞে আহুতি দিতে দিন, যজ্ঞের সঙ্কল্প পূরণ হোক ।
পূজারীর কথা অনুসারে ছেলেটি দেবীর নিকট উপস্থিত হয়। সে ছাতাটি তার মা কে দিয়ে, শ্রদ্ধার সাথে গ্রামের দেবীকে পুস্প অর্পণ করে, এবং যজ্ঞ-কুণ্ডে আহুতি দেয়। আর তখনই সবাই দেখে, নিমেষের মধ্যে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে, আর ঝম ঝম করে বৃষ্টি নেমে আসে ।
গ্রামের লোকেরা নেচে ওঠে। তারা দেবীর জয়- জয়কার করতে থাকে। অন্যদিকে প্রধান ছেলেটিকে ধমকাতে শুরু করে, “দেখ , তোর জন্যই বৃষ্টি হচ্ছিল না। তুই যদি ছাতা আনতে গিয়ে সময় নষ্ট না করতিস, তবে অনেক আগে থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যেত ।”
এই শুনে পূজারী বললেন, এই কথা ঠিক নয়। যদি ও ছাতা নিয়ে না আসত তবে বৃষ্টিও হত না। আসলে দেবী সারা গ্রামের মধ্যে একমাত্র ওই ছেলেটিরই আহুতি স্বীকার করেছেন, আর কারও নয়। ওর আহুতির মধ্যে ছিল বিশ্বাস, যা আপনাদের কারও মধ্যে ছিল না। ওর বিশ্বাস ছিল যে, যজ্ঞে আহুতি দেবার সাথে সাথেই বৃষ্টি আসবে। আপনাদের মধ্যে এই বিশ্বাস থাকলে , আপনারাও ছাতা নিয়ে আসতেন। এটা ওর বিশ্বাসেরই জয়।
আরও পড়ুন … … … 10 টি best শিক্ষামূলক গল্প
শিক্ষাঃ (Motivational Story বিশ্বাসের জয়)
বিশ্বাস থাকলে আপনি সফল হবেনই, পৃথিবীর কোন শক্তিই আপনাকে সফলতার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।